জামান মৃধা, ডিমলা (নীলফামারী)
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য দিন দিনই বেড়েই চলেছে। তাদের প্রতিদিনের দৌরাত্ম্যে নানা হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ রোগী এবং স্বজনেরা।
সাধারণত চিকিৎসকের কক্ষে সকাল ৯টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ওষুধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও তা মানছেন না কেউ। রোগীরা বের হলেই ব্যবস্থাপত্র নিয়ে চলে টানাহেঁচড়া। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছেন তারা।
রবিবার (২৯ অক্টোবর) সকালে উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন চিকিৎসকের কক্ষের ভেতরে ও সামনে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের ভিড় লেগেই আছে। আর ডাক্তারাও ব্যস্ত তার ঔষধ বাণিজ্য নিয়ে।
সুনির্দিষ্ট সময়ের বাইরে তারা ভিজিট করে রোগীদের চিকিৎসা সেবায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন। কোন কোন রোগীকে চিকিৎসকের কক্ষে ঢুকতে দেখলেই ৮/১০ জন প্রতিনিধি ওই কক্ষের সামনে এবং ভেতরে ভিড় করছেন। আবার কেউ কেউ রোগীকে অপেক্ষায় রেখে তাদের ভিজিট সেরে নিচ্ছেন। এর বাইরে প্রতিনিয়তই চোখে পড়ে এসব প্রতিনিধিদের নানান দৃশ্য।
সরকারি এ হাসপাতালটিতে রোগীরা ডাক্তারের কক্ষ থেকে বের হওয়া মাত্রই বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা তাদের পথে দাঁড় করিয়ে ব্যবস্থাপত্র টেনে নিয়ে সেটির ছবি তুলে রাখেন। প্রায়ই দেখা গেছে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের কক্ষের সামনে ভিড় করে আছেন। সেই ভিড়ে ঠেলে চিকিৎসকের কক্ষে ঢুকতে হচ্ছে রোগীদের। আবার ভেতরে প্রবেশ করলেও দেখা যায় সেখানে চলছে ভিজিট। এভাবেই প্রতিদিন সরকারি এ হাসপাতালটিতে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছে। ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রোগী ও তার স্বজনেরা।
স্কয়ার কোম্পানির প্রতিনিধি আব্দুল লতিফ বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের দুপুর একটা থেকে আড়াইটার মধ্যে ডাক্তারের সঙ্গে ভিজিট করার অনুমতি দেয়। কিন্তু কোনো কোম্পানির সার্ভে থাকলে ওই কোম্পানি হাসপাতালের ডাক্তারের কাছে ফোন করে অনুমতি নেন। তারপর আমরা ভিজিটে আসি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগী বলেন, আমি ডাক্তারের কক্ষে ঢুকেই দেখি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা ওই চিকিৎসকের সঙ্গে কেউ বসে, কেউ দাঁড়িয়ে কথা বলছেন। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর কক্ষে ঢুকে ডাক্তারের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়েছি।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রাশেদুজ্জামান বলেন, হাসপাতাল চলাকালীন সময়ে তাদের ভেতরে আসার কোনো নিয়ম নেই। তারা ভেতরে ঢুকছে এ বিষয়টা আগে আমার নজরে আসেনি। আমি এখনই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি